শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন
তরফ নিউজ ডেস্ক : “আমি নির্যাতনের শিকার হইয়া ফিরছি। বাড়িত গেলে আমার স্বামী আমারে ঘরো তুলতা নায়। আমার স্বামী কইছে ওমানের মালিক আমার সাথে খারাপ কাজ করছে, এর লাইগ্গা বাড়িত গেলে হাত পা ভাইঙ্গা ফালাইবো। স্যার আমি বাড়িত যাইতে চাইনা, আপনারা আমারে বাঁচাইন।”
শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় ওমান থেকে ঢাকার মাটিতে পা রেখেই ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সুনামগঞ্জের দিলারা (২৬) (ছদ্মনাম)।
জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা বীরগাও গ্রামের দিলারা গত ১০ জানুয়ারি গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে ওমান যান। মাত্র এক মাসেই অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে তাকে।
ইমিগ্রেশন ওসি দিলারার কথা শুনে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ইমিগ্রেশন থেকে বিষয়টি জানানো হয় বিমান বন্দর প্রবাসী কল্যাণ ডেক্স ও ব্রাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মকর্তাদের। ইমিগ্রেশনে দিলারার সাথে কথা বলেন ব্রাকের তথ্য কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন।
আল আমিন নয়ন বলেন, “মেয়েটিকে অমানুষিক নির্যাতন করেছে ওমানের মালিক (কফিল)। তার দুই চোখের নিচে কালো দাগ, মাথায় সেলাই। চেহারা দেখে আর তার মুখের ভাষ্য শুনে মনে হয়েছে দিলারা কোনো মানুষের কাছে নয় জানোয়ারের কাছে গিয়েছিলেন। নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি দেশে আসতে চাইলে মালিক তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। পরে ওমানে অবস্থানরত দিলারার এক ভাই এক লাখ টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে এনে দেশে পাঠায়।”
নয়ন আরো বলেন, “দিলারার সাথে কথা বলে জানতে পারি তার স্বামী খুব একটা ভাল মানুষ না। নিয়মিত জুয়া খেলেন। এখন দিলারা তার বাড়ি গেলে তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবেন না দিলারার স্বামী। উপরন্তু মারধর করবেন। দিলারার বাবা মা গরীব তাই তাদের কাছে ফিরে গেলে তাদের সংসারের বোঝা হয়ে যাবেন। তিনি বার বার বলছিলেন তাকে একটি কাজের ব্যবস্থা করে দিতে।”
এদিকে দেশে পৌছার পরপরই ব্রাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে দিলারাকে জরুরী সেবা দেওয়া হয়। দিলারার ভাইকে ঢাকায় এনে শুক্রবার দুপুরে তার বাবার বাড়িতে পাঠানো হয় বলে জানান ব্রাকের তথ্য কর্মকর্তা আল আমিন নয়ন।